1. my@subarnabarta.online : সুবর্ণ বার্তা : সুবর্ণ বার্তা
  2. info@www.subarnabarta.online : সুবর্ণ বার্তা :
শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:৩৬ অপরাহ্ন

সুবর্ণচরে ভূমিদস্যুদের উচ্ছেদ অনিবার্য

প্রতিবেদকের নাম:
  • প্রকাশিত: শনিবার, ১৮ মে, ২০২৪
  • ৮৯ বার পড়া হয়েছে

নোয়াখালীর সুবর্ণচরে বনবিভাগের হাজার হাজার একর খাসজমি অবৈধভাবে বেদখল করে আছে সামাজিক ও রাজনৈতিক লুটেরাগোষ্ঠী। নির্ভরযোগ্য সুত্রে জানা যায়,অভিনব পদ্ধতিতে ভুয়া নথি বা খতিয়ান সৃজন করেছে অনেকে। আবার নিরিহ কিছু লোকজন বসিয়ে তাদের নামে বন্দোবস্ত নিয়ে তাদের সরিয়ে দিয়েছে। বিভিন্ন দল বা গোষ্ঠীর সুবিধাভোগীরা ভূমি দখলে একাট্টা। সুবর্ণচরের বন বিভাগের জমির হিসাব নিকাশ জনগণকে জানাতে হবে নিশ্চিতভাবেই।।

এ বিষয়ে সুবর্ণ বার্তার একান্ত সাক্ষাতকারে সুবর্ণচরের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে সর্বদা সোচ্চার, দুর্নীতির বিরুদ্ধে আপোষহীন লেখক ও সোস্যাল একটিভিস্ট সহিদুল্লাহ বাচ্চু বলেন, পাকিস্তান সরকার(১৯৪৭-৭১): বন আইন, ১৯২৭ এর ২৯ ধারা মোতাবেক পাকিস্তান সরকার ৪ অক্টোবর, ১৯৭১ তারিখে নোয়াখালী সদরের উপকূলীয় দক্ষিণ চরক্লার্ক এবং চর আলা উদ্দিনের জরিপকৃত ১৪০৫.০৫ একর এবং দক্ষিণ চরক্লার্ক ও চরবাগ্যার ৬৯৭.০০ একর জরিপ বহির্ভূত ভুমিসহ মোট ২১০২.০৫ একর খাসজমি সংরক্ষিত বনভূমি হিসেবে প্রজ্ঞাপন জারি করে।

বাংলাদেশ সরকার (১৯৭১—):
বঙ্গোপসাগরের মোহনা ও নদীগর্ভে বা সংযোগস্থলে জেগে উঠা সরকারি সকল খাসজমি ভুমি মন্ত্রণালয়ের স্মারক নং ৩৪৪/১(৭)-৫-১৩৬/৭৬ এলএস তারিখ ১৩-০৮-১৯৭৬ ইং মুলে ভুমির স্থায়ীত্ব, স্থিতিশীলতা কায়েম এবং চাষোপযোগী করার লক্ষ্যে “সবুজ বেষ্টনী” তৈরি করতে কোন ওজর আপত্তি ছাড়া দশ বছরের জন্য বনবিভাগের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এ বিষয়ে কৃষি মন্ত্রণালয় ২৪-০৩-১৯৭৭ ইং তারিখে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে। পরিবর্তিতে উপকুলীয় বনাঞ্চলে জাগিয়া উঠা সকল বনভুমিকে আগামী ২০ বছরের জন্য বন অধিদপ্তরের নিকট হস্তান্তরের সিদ্ধান্ত গ্রহন করে বন ও পরিবেশ মন্ত্রনালয় ১১-০৯-১৯৯০ ইং তারিখে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে। নবগঠিত চরভূমি জনসাধারণের সকল প্রকার অধিগ্রহণ ও স্বত্ব হইতে মুক্ত থাকিবে। নোয়াখালীতে ৩,৮০,০০০.০০ একর ভুমির সীমারেখা অক্ষাংশ ও দ্রাঘিমাংশ হিসেবে নির্ধারিত হয়। বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপন মোতাবেক নির্ধারিত বিশ বছর সময় শেষ হওয়ার কথা ছিল ১০-০৯-২০১০ তারিখে।

নির্ধারিত অক্ষাংশ ও দ্রাঘিমাংশের মধ্যে জেগে উঠা নতুন চর/খাস ভুমি যা সরকারি প্রজ্ঞাপন নং পবম (শা-৩)৭/৯৭/৮৩২ সেপ্টেম্বর ১৯৯৯ ইং অনুযায়ী বাংলাদেশ গেজেট ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০০০ সংখ্যায় প্রকাশিত হয়েছে। সরকারি গেজেট মোতাবেক ফরেস্ট সেটেলমেন্ট অফিসারের কার্যালয় নোয়াখালী ১৯২৭ সনের ফরেস্ট এ্যাক্ট এর ৬ ধারার বিধান মতে বনভূমির তফসিল প্রকাশে একটি নোটিশ জারি করা হয়।

সুবর্ণচরে বনবিভাগের ভূমিঃ
(১) চরআলাউদ্দিন রেঞ্জে মোহাম্মদপুর ইউনিয়নে চর সহিদ মৌজায় জরিপ বহির্ভূত ৩০০০.০০ একর।
(২) হাবিবিয়া রেঞ্জের পুর্ব চরবাটা ইউনিয়নের চরমজিদ মৌজায় ৭০.৫৫ একর।
(৩) হাবিবিয়া রেঞ্জের পুর্ব চরবাটা ইউনিয়নের দক্ষিণ চরমজিদের ২৭৩.০২ একর।
(৪) চরবাটা রেঞ্জের পুর্ব চরবাটা ইউনিয়নের ৬৩৬৯ দাগের ২৯.২২ একর।
(৫) হাবিবিয়া রেঞ্জের চরজুবিলী ইউনিয়নের ৫.৯৭ একর ভুমি।

তাছাড়া মেঘনার গর্ভে জেগে উঠা হাজার হাজার একর ভুমি রয়েছে বলে বিভিন্ন মাধ্যমে বহুবার প্রচারিত হয়েছে। ভুৃমি মন্ত্রনালয় থেকে হস্তান্তরিত ভুমিতে বনবিভাগের গাছ উজাড় ও পাচার করতে চরের লতাপাতা চোরদের হাতে অর্থ আর অস্ত্র তুলে দিয়েছিল সামাজিক ও রাজনৈতিক লুটেরাগোষ্ঠী। নিরিহ, অসহায় নদীভাঙ্গা গৃহহীনদের বানিয়েছে বনদস্যু ও দস্যুসম্রাট। বিংশ শতাব্দীর শেষ দশকে নিরিহ ভুমিহীনদের মাধ্যমে বন উজাড় শেষ করেই হাজার হাজার একর জমি তুলে দেয়া হয় বহিরাগত ভুমিদস্যুদের হাতে। বনউজাড়, কাঠপাচার, বাড়ীঘরে অগ্নিসংযোগ, ভুমিহীন হত্যা, পুলিশের রাইফেল ছিনতাইসহ নানা অজুহাতে একবিংশ শতাব্দীর শুরুতে নির্মুল করা হয় বনদস্যুদের। লুটেরাগোষ্ঠী এ সুযোগে হাজার হাজার একর খাসজমি অবৈধভাবে দখল ও বিক্রি করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়।

প্রকৃত ভূমিহীনদের মধ্যে খাসজমি বন্দোবস্ত দানে মানা হয়নি কোন আইন বা বিধিমালা বলে অনেকে মনে করে।
(১) রাষ্ট্রীয় অধিগ্রহণ ও প্রজাস্বত্ব আইন, ১৯৫০
(২) ভুমি ব্যবস্থাপনা ম্যানুয়েল, ১৯৯০ ইং
(৩) কৃষি খাসজমি ব্যবস্থাপনা ও বন্দোবস্ত নীতিমালা ১৯৯৭ইং
(৪) অকৃষি খাসজমি বন্দোবস্ত ও নীতিমালা ১৯৯৫ই
সহ দেশের প্রচলিত আইন ও বিধিমালা।
২০০৫ সালে সৃজিত সুবর্ণচর উপজেলা প্রশাসন প্রকৃত ভুমিহীনদের মধ্যে খাসজমি বন্টনে আপোষহীন থাকলে ও লুটেরাদের প্রভাবে অনেকটা সম্ভব হয়নি।

সুবর্ণচরের ভুমি দুর্নীতি এ অঞ্চলে বৈষম্য ও অবিচার বৃদ্ধি করেছে। অতএব যে প্রক্রিয়ায় বনদস্যুদের নির্মুল করা হয়েছে একইভাবে ভূমিদস্যুদের নির্মুল বা উচ্ছেদ করা ও অপরিহার্য। সুশাসন নিশ্চিত করতে রাজনৈতিক ও সামাজিক নেতৃবৃন্দকে দৃষ্টান্ত দেখাতে হবে৷ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ ও উপজেলা নির্বাচন সম্পন্ন হল। নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিগণ এ বিষয়ে নতুন চমক দেখাতে ব্যর্থ হলে আগামীতে চরমভাবে জবাবদিহি করতে হবে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১
১২১৩১৪১৫১৬১৭১৮
১৯২০২১২২২৩২৪২৫
২৬২৭২৮২৯৩০৩১  
© সমস্ত অধিকার সংরক্ষিত
প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট