1. my@subarnabarta.online : সুবর্ণ বার্তা : সুবর্ণ বার্তা
  2. info@www.subarnabarta.online : সুবর্ণ বার্তা :
মঙ্গলবার, ১৫ এপ্রিল ২০২৫, ০৭:৪০ অপরাহ্ন

আজ নোয়াখালীর আঞ্চলিক গানের কিংবদন্তি সাধক অধ্যাপক হাশেমের মৃত্যুবার্ষিকী

প্রতিবেদকের নাম:
  • প্রকাশিত: রবিবার, ২৩ মার্চ, ২০২৫
  • ২২ বার পড়া হয়েছে

ছবি: সংগৃহীত

ডেস্ক রিপোর্ট:

আজ নোয়াখালীর আঞ্চলিক গানের কিংবদন্তি সাধক অধ্যাপক মো. হাশেমের মৃত্যুবার্ষিকী

নোয়াখালীর সুধারাম থানাধীন চরমটুয়া ইউনিয়নের শ্রীকৃষ্ণপুর গ্রামে ১৯৪৭খ্রি. ১০ জানুয়ারি জন্ম গ্রহন করেন। পিতা: মৃত. বীর মুক্তিযোদ্ধা দেলোয়ার হোসেন হেডমাস্টার ও মাতা: মৃত. জায়েদা খাতুন।

তিনি নোয়াখালী সুধারাম থানাধীন ঠেকার হাঁট প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ব্রাহ্মনবাড়িয়া নিয়াজ মোহাম্মদ হাইস্কুল থেকে যথাক্রমে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায় অধ্যায়ন করেন এবং ঢাকাস্ত নতুন পল্টন পুলিশ লাইনস্ হাইস্কুল থেকে ১৯৬২খ্রি. ম্যাট্রিক পাশ করেন অত:পর জগন্নাথ কলেজ থেকে ১৯৬৪খ্রি. এইচ.এস.সি এবং ১৯৬৭খ্রি. স্নাতক
পাশ করেন। তিনি ১৯৬৯খ্রি. ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা সাহিত্যে এম.এ ডিগ্রী লাভ করেন।

১৯৬৮খ্রি. সঙ্গীত মহাবিদ্যালয়ে ভর্তি হন। সঙ্গীত মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ শ্রী বারীন মজুমদার এর কাছে উচ্চাঙ্গ সঙ্গীত, ওস্তাদ আবেদ হোসেন ও ময়না ভাইয়ের কাছে তত্ত্বীয় এবং ওস্তাদ মোহাম্মদ হোসেন খান এর কাছে তবলার তাল সম্পর্কিত তালিম গ্রহন করেন। লোক সঙ্গীতের পাঠ গ্রহন করেন প্রখ্যাত সঙ্গীত শিল্পী আবদুল আলিম এর নিকট। প্রথমে ছাত্র এবং পরে শিক্ষক হিসেবে তিনি ঢাকা সঙ্গীত মহাবিদ্যালয়ে বাংলা সাহিত্য ও সঙ্গীত বিভাগের শিক্ষকতা করেছেন প্রায় ১০ বছর অবধি। তারপর কিছুদিন চট্টগ্রাম বেতারে অনুষ্ঠান অধিকর্তার দায়িত্ব পালন করেন।

অতঃপর নিজ জেলায় এসে কবিরহাট সরকারি কলেজ, লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজ ও সর্বশেষ নোয়াখালী সরকারি কলেজে অধ্যাপনা শেষে ২০০৫খ্রি.অবসর গ্রহন করেন। তারপর থেকে মাইজদী শহরে দত্তের হাঁটের দক্ষিণে গোপাই গ্রামে অবসর জীবন যাপন ও সঙ্গীত সাধনারত ছিলেন।

তিনি ১৯৬৬খ্রি.থেকে বেতার ও টেলিভিশনের একজন তালিকাভূক্ত কণ্ঠসঙ্গীত শিল্পী। এরপর তিনি একজন বিশেষ শ্রেণিভূক্ত বেতার ও টেলিভিশনের গীতিকার, সুরকার ও কণ্ঠশিষ্পী। ইতোমধ্যে গ্রামোফোন রেকর্ড ছাড়াও তাঁর অন্তত ১৫ টি অডিও ক্যাসেট ও সিডি প্রকাশিত হয়েছে। ২০০৫ খ্রি. তাঁর রচিত নোয়াখালীর আঞ্চলিক গানের বই প্রকাশিত হয়েছে।

নোয়াখালীর মাটি ও মানুষ ইতিহাস-ঐতিহ্য, গৌরব গাঁথা, প্রেম-বিরহ, প্রকৃতি-নিসর্গ ও জীবন সংগ্রামের বাণীচিত্র এ গান গুলোতে অলংকৃত হয়েছে। শব্দালংকার ও অর্থালংকার ছাড়াও ভাব-ভাষা, শব্দ চয়ন, অন্তঃমিল, ছন্দ, নোয়াখালীর প্রবাদ-প্রবচন, ধাঁ-ধাঁ প্রভৃতির ব্যবহারে তাঁর গানগুলো শ্রোতার অনুভূতি ও আবেগকে নাড়া দিতে সক্ষম হয়েছে। তাঁর গান আমাদের লোক বা পল্লীগীতি অঙ্গনে নবমাত্রার সংযোজন ঘটিয়েছে তা সহজেই অনুমিত।

অধ্যাপক মো: হাশেম নোয়াখালীর আঞ্চলিক গান রচনা শুরু করেন ১৯৭৩-১৯৭৪ খ্রি. ‘আঙ্গো বাড়ী নোয়াখালী রয়্যাল ডিষ্টিক ভাই এবং “রিক্সা আলা কুচকাই চালা’ এ দুটো গানের মধ্য দিয়ে। সেই থেকে তিনি লিখে যাচ্ছেন অবিরাম।

বাংলাদেশে তিনি ছিলেন সেই বিরল প্রতিভার অধিকারী যাঁর মধ্যে একই সঙ্গে গীতিকার, সুরকার ও কণ্ঠশিল্পী এই তিন প্রতিভার স্বার্থক সম্মিলন ঘটেছে। বাংলাদেশ বেতার, টেলিভিশন ও মঞ্চে ছিল তাঁর সমান পদচারনা। তিনি রেডিও ও টেলিভিশনের এক বিশেষ শ্রেণির শিল্পী। তিনি যথার্থই নোয়াখালীর আঞ্চলিক গানের জনক। তাঁকে আমরা সম্মানিত করি নোয়াখালীর লোক সংস্কৃতি চর্চার সাধক পুরুষ হিসেবে।

তাঁর রচিত অন্যান্য জনপ্রিয় গান ‘আঙ্গো বাড়ী নোয়াখালী, তোগো বাড়ী হেনী, ডুবাই গেছে আঙ্গো বাড়ীর মোহাম্মদ আলী, আল্লায় দিছে বল্লার বাসা নোয়াখাইল্লা মাডি, ইদ্দিরিতান মাইজদী শহর, ইন্নালিল্লা মাইজদীর বাস, চাকরি করি আদমজী, আহারে ও কুলছুম, আঙ্গো উত্তর বাড়ীর তারা, বেক যদি ডুবাই যাইবো, হাইদলে বৌগা ভাত খায়না, আশ্রাফুল মাখলুকাত ওরে ও মানব জাত হেয়ার তোন বড় কেহ নাই প্রভূতি। মমতাজ আলী খান সঙ্গীত একাডেমী ঢাকান্থ জাতীয় জাদুঘরের শওকত ওসমান স্মৃতি মিলনায়তনে সঙ্গীত শিল্পী হিসেবে সম্মাননা প্রাপ্ত হয়েছেন। ছায়ানট আয়োজিত লোকসঙ্গীতের বার্ষিক অনুষ্ঠান উদ্বোধন করে তিনি সম্মানিত হয়েছেন জাতীয়
পর্যায়ে।

জনাব মো: হাশেম ২০১৩খ্রি. জেলা শিল্পকলা একাডেমি, নোয়াখালী থেকে ‘লোকসঙ্গীত’ বিষয়ে গুণীজন সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন।

স্ত্রী, চার কন্যা ও তিন পুত্র আছে তাঁর পরিবারে। তাঁরা সবাই স্ব-স্ব ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত। তাঁর তিন কন্যা ও একপুত্র বেতার ও টেলিভিশনের নিয়মিত সঙ্গীতশিল্পী।তার বড় ছেলে মুস্তফা মনওয়ার সুজন গ্লোবাল টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক এবং ছোট ছেলে রায়হান কায়সার শাওন নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের, মেজো ছেলে রুবাইয়াত নূর হাসেম রূপালী ব্যাংকে সিনিয়র অফিসার হিসেবে কর্মরত আছেন।

নোয়াখালী জেলার লোক সঙ্গীতের এ মহান যাদুকর দীর্ঘদিন অসুস্থ থেকে গত ২৩ মার্চ ২০২০খ্রি. তিয়াত্তর বছর বয়সে দুনিয়ার মায়া ত্যাগ করে পরপারে পাড়িজমান। রেখে গেছেন তাঁর সকল শৈল্পীক সৃষ্টিকর্ম।

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩১৪১৫১৬
১৭১৮১৯২০২১২২২৩
২৪২৫২৬২৭২৮২৯৩০
৩১  
© সমস্ত অধিকার সংরক্ষিত
প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট