আজিজুর রহমান, নোয়াখালীঃ
নোয়াখালীর বিচ্ছিন্ন দ্বীপ হাতিয়া উপজেলা। দীর্ঘদিন যাবত এই অঞ্চলে একক রাজত্ব করে আসছিলেন আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য মোহাম্মদ আলী। আলী পরিবারের কাছে এতদিন জিম্মি ছিল দ্বীপ হাতিয়ার প্রায় ৮ লাখ মানুষ।
হাতিয়া থেকে নোয়াখালীর মূল ভূখণ্ডে যেতে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হতো জনসাধারণকে। কারণ এই অঞ্চলে আলী পরিবারের ব্যবসা টিকিয়ে রাখার জন্য উন্নতমানের কোনো যান চলাচল করতে দেয়া হতো না। অবশেষে দীর্ঘদিনের এই দুর্ভোগ লাগবে এগিয়ে আসছে নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়।
এই অঞ্চলে হাতিয়া থেকে নোয়াখালীর মূল ভূখণ্ডে যাতায়াতের জন্য একটি ফেরি দিয়ে হাতিয়াবাসীর দীর্ঘদিনের যাতায়াতের দুর্ভোগ মেটানোর আশ্বাস দিয়েছেন নৌ পরিবহণ সচিব মোস্তফা কামাল।
তিনি বলেছেন, হাতিয়া দ্বীপের সঙ্গে ফেরি যোগাযোগ নিশ্চিত করা যায় কিনা সেজন্য আমরা কারিগরি কমিটি দিয়ে যাচাই বাছাই করে পদক্ষেপ নিবো।
মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক হাতিয়ার কৃতি সন্তান আবদুল হান্নান মাসুদের দাবির প্রেক্ষিতে এ আশ্বাস দেন নৌ সচিব। এসময় মাসুদ তার নিজ জন্মস্থান হাতিয়া দ্বীপের যাতায়াত ব্যবস্থার উন্নতির জন্য বেশ কিছু দাবি জানান।
সচিবের কাছে যে দাবি গুলো ছিল তা হচ্ছে-১. হাতিয়ার দক্ষিণাংশের নলচিরা ঘাট থেকে উত্তরাংশের চেয়ারম্যান ঘাট রুটে একটি আধুনিক ফেরি চালু করা ২. চরচেঙ্গা-তমরুদ্দি-চেয়ারম্যান ঘাট রুটে সি-ট্রাক পুনরায় চালু করা। ৩. প্রাইভেট-ভাবে একটি স্টিমার চালানোর অনুমতি প্রদান করা। ৪. চট্টগ্রাম-হাতিয়া রুটে প্রতিদিন জাহাজ চালানের ব্যবস্থা করা।৫. ঘাট কেন্দ্রিক সবধরনের নৈরাজ্য বন্ধ করা।৬. ঢাকা-হাতিয়া আরও দুটি লঞ্চ সংযোগ করা।
নৌপরিবহন সচিব দাবিগুলোর সাথে একমত পোষণ করেন। পরে সচিবের নির্দেশনায় বিআইডব্লিউটিএর পরিচালক আশিকুজ্জামানের নেতৃত্বে একটি টিম দ্বীপের নৌপথ এলাকা পরিদর্শন করেন।
সচিব বলেন, যাত্রীদের সুবিধার জন্য আমাদের যা যা করা দরকার আমরা সব কিছু করতে প্রস্তুত।এছাড়া বিগত বছরগুলোতে যে সমস্যা হয়েছে লঞ্চ যাতায়াতে এবং যাত্রীদের সুবিধা অনুযায়ী ভাড়া কমিয়ে আনারও আশ্বাস দিয়েছেন এই নৌ সচিব।
আব্দুল হান্নান মাসুদ অগ্রযাত্রাকে বলেন, আমরা বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন থেকে এখন একটা রাষ্ট্র সংস্কারের কাজে নিজেকে নিয়োজিত করেছি। আমি হাতিয়ার সন্তান হিসেবে এটা আমার নৈতিক দায়িত্ব বলে মনে করি যে যতদূর সম্ভব হাতিয়ার মানুষের দীর্ঘদিনের আশা আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটানো যায়। এজন্য আমি নৌ পরিবহন সচিবের সাথে কথা বলেছি হাতিয়াতে একটি ফেরি দেওয়ার জন্য। এছাড়াও আরো কিছু দাবি উপস্থাপন করেছি। হাতিয়াতে বিআইডব্লিউটিএর একটি প্রতিনিধি দল ইতোমধ্যে পরিদর্শনে গিয়েছে এবং সেখানে আমারও একটি প্রতিনিধি দল ছিল। সচিব মহোদয় দুই মাসের মধ্যে আমাদের দাবিগুলো পূরণের আশ্বাস দিয়েছেন