ইদানীং এর মধ্যে গতকাল সবচেয়ে বেশী পোস্ট রাসেল'স ভাইপার নিয়ে। এ বিষয়ে প্রচুর ভুলভাল পোস্ট এবং সংবাদও ফেসবুকে ঘুরে বেড়াচ্ছে, যা জনমনে ভুল ধারণা ও আতঙ্কের জন্ম দিচ্ছে।
এবিষয়ে, হাতিয়ার বিশিষ্ট সমাজ সেবক ও আইনজীবী ফজলে আজিম তুহিন বলেন, রাসেল'স ভাইপার নিয়ে আমাদের মধ্যে কিছু ভুল ধারণা রয়েছে। রাসেলস ভাইপার বিশ্বের ৫ম বিষধর সাপ নয়, এমনকি এটি সেরা ৩০ নাম্বারের মধ্যেও নেই। বরং এটির অবস্থান আমাদের দেশের গোখরো বা ক্রেইটের-ও পরে, এবং এর কামড়ে সুস্থ হওয়া অহরহ মানুষ আছে।
আবার, মোটেও এটির কামড়ে বাঁচার সম্ভাবনা ২০% বা এতো কম নয়, বরং রেকর্ড অনুযায়ী এই স্ট্যাটিস্টিক্সটি উল্টো।
শুধু হাসাপাতালে দেরীতে যাওয়া, ওঝার কাছে গিয়ে সময় নষ্ট করা এবং ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী না চলা বা কনসাল্টের মধ্যে না থাকার কারণেই রুগী মারা পড়ে পরবর্তীতে।
তারপরেও রাসেল'স ভাইপারের কামড়ে সুস্থতার হার ৭০% এর মতো প্রায়, যদি সঠিক সময়ে সঠিক চিকিৎসা নেয় তবে সুস্থতার হার ৯০% এর চেয়ে বেশি তথ্যানুসারে।
এরা বাচ্চা গড়ে ৩৫টি করে দেয়, তাও-ও প্রাকৃতিক বা ইকোসিস্টেমের কারণে অর্ধেক বাচ্চা এমনিতেই মারা পড়ে, যেমন: চিল, পেঁচা, শিয়াল, বনবিড়াল, বানর, গুইসাপ, বেঁজি ইত্যাদি সহ আরে বেশ কিছু প্রাকৃতিক কারণ।
আবার এরা রাগের দিক থেকেও পিছিয়ে অনেক, "বিশ্বের সবচেয়ে রাগী সাপ ব্ল্যাক মাম্বা, পাফ-এডার ইত্যাদি থেকে তো পিছিয়ে-ই এমনকি গোখরা থেকেও পিছিয়ে।"
কোনো সাপ-ই তেড়ে এসে কামড়ায় না,বরং সাপেরা মানুষদের এড়িয়ে চলা পছন্দ করে।
যদি আপনি ওদের কোণঠাসা না করেন বা খুব কাছে গিয়ে বা এমন কিছু করে ওদের থ্রেট ফিল না করান, তবে কখনোই আপনাকে কামড়াতে উদ্ধত হবে না।
এক্ষেত্রে অনেক সময় ওরা আপনার দিকে আক্রমনাত্মক ভঙ্গিতে হিস সাউন্ড অথবা বাইট ছুরবে ভয় দেখাতে, যেটা দেখে অনেকেই ভেবে বসে যে তাড়া করছে।
তাছাড়া রাসেল'স ভাইপারের বাইটের প্রায় অধিকাংশ রেকর্ড-ই হলো ওদের ওপর পা অথবা হাত দেয়া, নয়তো অজগর ভেবে ধরতে যাওয়া।
এছাড়া রাসেল'স ভাইপার এতোটাই অলস প্রকৃতির যে মানুষ দেখে তেড়ে আসা অথবা পালানো, কোনোটিই-ই এদের সাথে যায় না। এমনকি বাধ্য না হলে এরা নিজের জায়গা থেকে নড়ে-ই না, একই জায়গাতেই ৩-৪ দিন'ও পড়ে থাকে।
আল্লাহ আল্লাহ সোবহানুতায়ালা আমাদের প্রকৃতির সব কিছুই প্রকৃতি তথা আমাদের প্রয়োজনে সৃষ্টি করেছেন। এরা আমাদের ইকোলজি যেমন ব্যালেন্স করে, তেমন আমাদের বিভিন্ন রক্তবাহিত জটিল এবং কঠিন রোগের ঔষধ-ও প্রদান করে।
হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক, ব্লাড প্রেশার নিয়ন্ত্রণকারী Captopril-জাতীয় ঔষধ, এমনকি বেথা নাশক বা পেইন কিলারের মতো মেডিসিন তৈরীতেও সাপের ভেনম ব্যাবহার হয়।
এবং
সাপের এন্টিভেনম দু’প্রকারের: একটি মনোভ্যালেন্ট বা নির্দিষ্ট সাপের, আর অন্যটি পলিভ্যালেন্ট বা সব বিষধর সাপের জন্য কার্যকরী একটি ককটেল বা এন্টিভেনমের মিশ্রণ।
সুতরাং, রাসেল'স ভাইপার সহ সব বিষধর সাপের এন্টিভেনম-ই আছে দেশে।
উপরোক্ত তথ্য সূত্র:
Wildlife and snake Recue Team in Bangladesh ( Wsrtbd)
সর্বোপরি, সাপ'সহ সকল প্রাণীরা আমাদের ইকোলজি বা প্রকৃতির অংশ। আমাদের যা করার আছে তা হলো
একমাত্র সঠিক তথ্য এবং ধারণা-ই আমাদের সুরক্ষিত রাখতে পারে।
সাপে কাটলে ওঝা নয়
হাসপাতালেই চিকিৎসা হয়।
বিশেষ অনুরোধ হলো :
করোনা কালে বহু যুদ্ধে, চাহিদার প্রতিযোগীতার ভীড়েও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও পরবর্তীতে এজনপদের রাজনৈতিক সর্বোচ্চ নেতা মোহাম্মদ আলী এম পি মহোদয় এর ঐকান্তিক চেষ্টাায় অক্সিজেন সিলিন্ডার হাতিয়া হাসপাতালে আসে।
এ পর্যায়ে মনোভ্যালেন্ট ( নির্দিষ্ট সাপের )
পলিভ্যালেন্ট (এন্টিভেনমের মিশ্রণ)
হাতিয়া হাসপাতালে সংরক্ষণ করে রাখা দরকার।
এখনি আবেদন হোক।
সবার পোস্ট হবে, হাতিয়ার মাটিতে মানুষের জন্যে
!।! মনোভ্যালেন্ট পলিভ্যালেন্ট চাই।!।
নতুবা, শুধু মাত্র সময় ক্ষেপনের কারনে আক্রান্ত মানুষ মারা যাবে।
বি.দ্র: পারলে আজই হাতিয়া স্নেক রেসকিউ টীম গঠন করা দরকার